বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন মানববন্ধনে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন কর্ণফূলী নদী বাঁচলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী হবে

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ রোকন উদ্দিন জয়
  • Update Time : সোমবার, ১০ অক্টোবর, ২০২২
  • ২৩৬ Time View

বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন মানববন্ধনে ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন কর্ণফূলী নদী বাঁচলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী হবে

কর্ণফূলী নদী, হালদা নদী দখল, দূষণে জড়িত এবং চট্টগ্রামের পাহাড়খেকোদের গ্রেফতারের দাবীতে আজ ১০ অক্টোবর সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ পরিবেশ সুরক্ষা আন্দোলন চট্টগ্রাম উত্তর-দক্ষিণ মহানগর শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, কর্ণফূলী নদী বাঁচলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধশালী হবে। স্বাধীনতার পর থেকে রাজনৈতিক নামধারীরা কর্ণফূলী নদী, হালদা নদী, পাহাড় কাটাসহ পরিবেশ ধ্বংসের সাথে জড়িত রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থাকা সকল লুটেরা প্রভাবশালী মাফিয়াদের গ্রেফতারের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত ভিসি হালদা নদী গবেষক প্রফেসর ড. মোঃ আলী আজাদী বলেন, কর্ণফুলী নদীর প্রাণ-প্রকৃতি, উদ্ভিদ বৈচিত্র্য, বঙ্গোপসাগরের মোহনা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত দূষণের জন্য দায়ী ৯৯টি উৎস ও ৩৩টি কারণ চিহ্নিত করেছি। কর্ণফূলী নদীর মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত দূষণ হচ্ছে সবচাইতে বেশি। এর মধ্যে ছোট-বড় ৩৭টি শিল্প প্রতিষ্ঠান থেকে নদীতে নির্গত বর্জ্য মানবদেহে ও প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের উপস্থিতি আমার গবেষনায় নির্ণয় করেছি। তাই অবিলম্বে দখল দূষণ বন্ধ না হলে উদ্ভিদের পাশাপাশি ডলফিনসহ বিভিন্ন প্রাণীর বিলুপ্তির আশংঙ্খা রয়েছে। একই সঙ্গে দৈনন্দিন কাজে কর্ণফূলীর উপর নির্ভরশীল মানুষগুলো চর্মরোগ, শ্বাসকষ্ট, ক্যান্সারসহ স্বাস্থ্য ঝুঁকি ৯৯% রয়েছে। তিনি আরো বলেন, শিকলবাহা চ্যানেলে ৪২, বোয়ালখালী চ্যানেল ২৬ এবং অন্যান্য স্থানে ১৪টিসহ মোট ৮২টি ডলফিন আমার গবেষণা করতে গিয়ে দেখতে পেয়েছি। কিন্তু মোহনা থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত অসংখ্য নৌযান নোঙর করে রাখায় নদীর স্বাভাবিক নাব্যতা এবং ডলফিনসহ জলজ প্রাণীদের অবাধ বিচরণে বারংবার বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। সবচেয়ে বাধাগ্রস্থ এলাকা বোয়ালখালী ও শিকলবাহা দূষণ বন্ধ না হলে স্বাভাবিক চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হচ্ছে। এতে বিলুপ্ত হবে ডলফিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পরিবেশবীদ, গবেষক, প্রফেসর ড. আতিকুর রহমান বলেন, নদীর দুইপাশে শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে নদীতে নির্গত বর্জ্য পদার্থ সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে মানবদেহে এবং প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্যের উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। এগুলোর মধ্যে অত্যাধিক ক্ষারকীয় দ্রবণ, দ্রবীভূত কঠিন পদার্থ, ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য বারংবার উপস্থিতি। কালুরঘাটের পর থেকে দূষণ, নদীদখল, বর্জ্য পদার্থ, শহরের ড্রেনের দূষিত পানির মিশ্রণের কারণে দিন দিন উদ্ভিদ প্রজাতির সংখ্যা আজ বিলুপ্তির পথে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ড. মোঃ ইদ্রিস আলী বলেন, আমার জীবনে কর্ণফূলী নদীর গবেষণায় যেটা দেখতে পাচ্ছি কর্ণফুলী নদীর মোহনা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত ৬২৮টি প্রজাতির উদ্ভিদ প্রজাতি শনাক্ত করেছি। যা ৩৩৭টি গণভুক্ত ১৩৬টি পরিবারে অন্তর্গত। এর মধ্যে বড় বৃক্ষ হচ্ছে ১৪৭ প্রজাতির, গুল্ম ৭২ প্রজাতির. লতা ৬২ প্রজাতির, বীরুৎ ২৪৮ প্রজাতির এবং পরজীবী বা পরগাছা ১৮ প্রজাতির। শনাক্তকৃত পরজীবীর মাঝে একটি নগ্নজীবী উদ্ভিদ ৯টি মসগোত্রীয় এবং ২৮টি ফার্ন প্রজাতি রয়েছে। উদ্ভিদ শনাক্ত হয়েছে ১২২ প্রজাতি আর দ্বিবীজপত্রী উদ্ভিদ শনাক্ত হয়েছে ৩৮২ প্রজাতির। নদীর মাঝখানে বাকলিয়া চরে ১৫৭ এবং সবচেয়ে দূষিত এলাকায় বঙ্গোপসাগর মোহনা থেকে কালুরঘাটের পর পর্যন্ত পাওয়া গেছে মোট ১৩২ প্রজাতির উদ্ভিদ। শনাক্তকৃত গাছের মধ্যে সর্বমোট ৩৬২টি ঔষধি উদ্ভিদ রয়েছে। বঙ্গোপসাগর মোহনা থেকে কাপ্তাই পর্যন্ত দূষণের ৯৯ উৎসের মধ্যে ছোট-বড় ৬২টি শিল্পকারখানা, ১৪টি নৌযান মেরামতের জায়গাসহ বাজার নালা, খামার ও শুটকির পল্লী রয়েছে। অবশ্য এর অধিকাংশ মোহনা থেকে কালুরঘাট ব্রীজ পর্যন্ত জায়গায় অবস্থিত। উৎসগুলোর মধ্যে ৭৬টি পানি ও বায়ু, ৪২টি মাটি, চারটি শব্দ, ১৮টি তাপীয়, ৫টি ধূলি, ১৮টি ভারী ধাতু, ১৫টি প্লাস্টিক এবং ১০টি ভূমি ক্ষয়ের জন্য দায়ী। কর্ণফূলী নদীতে ৮৫টি মার্চেন্ট জাহাজ, ৪০৫টি কোস্টাল জাহাজ, ২৬৪টি মাছ ধরার ট্রলার ও ৯টি ট্রাক নৌকা, বিদেশি জাহাজ, ট্রলার, সাম্পান, ছোট ছোট নৌকা চলাচল করে। এই সমস্ত নৌযানের ময়লা পোড়া তেল নদীতে সরাসরি ফেলায় নদী দূষিত হচ্ছে। নগরের বর্জ্য বিভিন্ন নালা দিয়ে কর্ণফূলী নদীর পানিতে মিশে যাচ্ছে। নদীর তীরে পোড়া তেলের ব্যবসা জাহাজ মেরামতের কারখানা থেকে সৃষ্ট উপজাত যেমন পোরানো রং, মরিচা, অপচনশীল ভাসমান প্লাস্টিক, নদীর পাড়ে খোলা শৌচাগার, বাঁধ দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী, কসাই খানার বর্জ্য, মৃত পশু পাখি সরাসরি নদীতে নিক্ষেপ, বিষপ্রয়োগ করে মাছ ধরা, নৌযান থেকে পলিথিন, খাবারের প্যাকেট, টিস্যু, নৌ দুর্ঘটনার কারণে তেল নির্গমণ, অপ্রয়োজনীয় নষ্ট মালামাল নদীতে ফেলা। ফলে কর্ণফুলী নদী নাব্যতা হারাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর বালুচরে পরিণত হবে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাবে। প্রধান বক্তা বাপসার সভাপতি এম.এ হাশেম রাজু বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, চট্টগ্রাম জেলা, রাঙ্গমাটি জেলা, খাগড়াছড়ি জেলা, বান্দবন জেলা, কক্সবাজার জেলা সহ বাঁশখালী উপজেলার ১০ নং চাম্বল ইউনিয়নের পাহাড়খেকো অস্ত্রব্যবসায়ী মুজিবসহ পরিবেশ ধ্বংসকারীদের গ্রেফতারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় পরিবেশবাদীদের নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করতে বাধ্য হব। বাপসা চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আবু মোহাম্মদ হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জানে আলমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন বাপসার জাতীয় কাউন্সিলর জালাল উদ্দিন মঞ্জু, রাজনীতিবিদ মো: সোলাইমান খান, বাপসার জাতীয় কাউন্সিলর এম.এ কালাম বাবু, সেলিম রেজা, মো: ওয়াজেদ আলী, সবুজ পাতা কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি মহিউদ্দিন প্রমুখ।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

এই মহৎ ব্যক্তিটির নাম কাজী সফিউল হাসান সজিব মহরম কাজী জসীমউদ্দীনের ছেলে দেবিদ্বার উপজেলা এলাবাদ ইউনিয়নের ফুলতলী গ্রামের কৃতি সন্তান রমজান মাসে একটি মহৎ কাজ করে যাচ্ছেন তিনি রোজার প্রথম দিন থেকে পুরো মাস ওনার প্রতিষ্ঠানের কুমিল্লা হাইওয়ে হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট এবং আলতাজের হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট ১২০ প্লেট ইফতার সামগ্রী একদম ফ্রি খাওয়াচ্ছে গাড়ির স্টাফদের কে এবং যাত্রীদেরকে। যাত্রীদের চাহিদা অনুযায়ী আরো প্লেট বাড়ানো হবে তিনি বলেন রমজান মাসে সকল ব্যবসায়ীরা ইফতার সামগ্রী অনেক উচ্চ দামে বিক্রি করে অনেক অসহায় যাত্রী ইফতারের সময় হোটেলে না ঢুকে বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে ইচ্ছা থাকলেও টাকার অভাবে কিনে খেতে পারে না এসব ভেবে আমি এই উদ্যোগটি নিয়েছি ইফতারের দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন যাদের মনের মধ্যে এ নিয়ে কোন দ্বিধা বা সংশোচন না থাকে এই কারণে দান বাক্স মধ্যে টাকা দিয়ে যেতে পারবেন ওই টাকা মসজিদে দান করা হবে এটি দয়া বা দানের পর্যায়ে পড়বে না যেখানে রমজান মাসে এলে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে নিত্যপূর্ণের দাম বাড়ানো এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা শুরু হয় সেখানেই এই মানুষটি এই মহতী উদ্যোগ অবশ্যই সাধুবাদ পাওয়ার দাবিদার শ্রদ্ধা জানাই এই ভালো মানুষটিকে আল্লাহ পাক আপনার বাবাকে জান্নাত নসিব করুক এবং আপনাকে সবসময় ভালো রাখুক।

এই মাহে রমজান উপলক্ষে ফ্রী ইফতার খাওয়াচ্ছেন কুমিল্লা হাইওয়ে হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট