গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪.০০ ঘটিকার কিছু পূর্বে মৎস ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রাকিব ফিশের কর্মচারী আবদুর রহিম প্রতিষ্ঠান প্রধান মোঃ ইউসুফের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে পাহাড়তলী শাখার ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক লিঃ থেকে চেকমূলে ৬,০০,০০০ টাকা উত্তোলন করে। কর্মচারী আবদুর রহিম বিকাল ৪ টার পরে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পাওনা পাহাড়তলী বাজারের মাছ ব্যবসায়ী মনিরের দোকান থেকে ৬০,৩০০/- টাকা বুঝে নেয়। ব্যাংক হতে উত্তোলনকৃত ৬,০০,০০০/- টাকা এবং ব্যবসায়িক পাওনা টাকা ৬০,৩০০/- টাকাসহ মোট ৬,৬০,৩০০/-টাকা নিয়ে রানী রাসমণি ঘাটের উদ্দেশে সে রওয়ানা হয়। কিন্তু সন্ধ্যা নাগাদ কর্মচারী আবদুর রহিম সেখানে না পৌঁছানোয় বাদি মোঃ ইউসুফ ও তার সঙ্গীয় ব্যবসায়িক অংশিদারসহ আবদুর রহিমের খোঁজে ডবলমুরিং মডেল থানাধীন পাহাড়তলী বাজারে আসেন। খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ঐদিন রাতে বাদি মোঃ ইউসুফ ডবলমুরিং থানায় আসেন। কিছুক্ষণ পরে বাদি জানতে পারেন তার কর্মচারী আবদুর রহিমকে সীতাকুণ্ড থানাধীন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কালুশাহ্ মাজারগেটের কাছে অজ্ঞান অবস্হায় পাওয়া যায়। বাদি তার সঙ্গীয় লোকজন নিয়ে ঐদিন রাত অনুমান ১১.০০ ঘটিকায় কালুশাহ্ মাজার গেটের কাছে গিয়ে তাকে সড়কে অজ্ঞান অবস্হায় পায়। কর্মচারী আবদুর রহিমকে বাদি টাকার কথা জিজ্ঞাসা করলে আবদুর রহিম আস্তে আস্তে জানায়, সে কীভাবে কালুশাহ মাজারের কাছে গেল। সে কিছু জানে না কথা বলেই সে আবার চোখ বন্ধ করে অজ্ঞান হয়ে যায়। বাদি কর্মচারী আবদুর রহিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাঠায়, সেখানে সে ভর্তি থেকে ২ দিন চিকিৎসা গ্রহণ করে এবং অজ্ঞান থাকার ভান করে। আবদুর রহিম চিকিৎসাধীন ও অজ্ঞান অবস্হায় থাকায় এবং সে কোন কথা না বলায় বাদি এবং পুলিশ ঘটনার বিষয়ে ঠিক কী ঘটেছিল স্পষ্ট কোন তথ্য পাচ্ছিলো না। এরই মধ্যে ডবলমুরিং মডেল থানার এসআই ইমান হোসেন পাহাড়তলী বাজার ও আশপাশের সড়কে সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করে, কিন্তু ঘটনা সংশ্লিষ্ট কোন সিসিটিভি ফুটেজ পেতে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে এসআই ইমান হোসেন ডবলমুরিং থানা এলাকার গন্ডি পেরিয়ে পাহাড়তলী থানাধীন অলংকার শপিং কমপ্লেক্সের সামনের একটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করতে সক্ষম হয় যেগিতে দেখা যাচ্ছে আবদুর রহিম ঘটনার দিন বিকেল ৫ টার পর শপিং ব্যাগে করে টাকা নিয়ে সুস্হ স্বাভাবিকভাবেই পায়ে হেঁটে রাস্তা পার হচ্ছে। আবদুর রহিম হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নেয়ার পর বাদি উক্ত সিসিটিভি ফুটেজ আবদুর রহিমকে দেখালে সে জানায় পাহাড়তলী বাজার থেকে উক্ত টাকা নিয়ে ১০ নং ম্যক্সিমা লেগুনা গাড়িতে উঠে পাহাড়তলীর অলংকার মোড়ের আগে নামে। সে জানায় অলংকার মোড়ের আগে নামার পর ঠিক কী হয়েছে সে কিছু বলতে পারে না। টাকা কোথায় গেছে তাও সে জানে না। বিবাদি আবদুর রহিম কি অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েছিলো না কি নিজে টাকা আত্মসাৎ করার অভিনয় করছে এ নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। একইসাথে অপরাধকার্যের ঘটনাস্হলও স্পষ্ট হচ্ছিল না। অবশেষে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তের একপর্যায়ে কর্মচারী আবদুর রহিম নিজে অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে স্পষ্ট হলে আবদুর রহিমকে গ্রেফতার করা হয়। কর্মচারী হয়ে মালিকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে আবদুর রহিমের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু হয়। মামলা রুজু পরবর্তীতে এসআই ইমান হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকশ টিমের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে আবদুর রহিম স্বীকার করে ঘটনার দিন বিকাল ৫ টার পর সে উক্ত টাকা নিয়ে অলঙ্কার মোড় থেকে বাসযোগে নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন তার নিজ বাড়ির শোবার ঘরে পরিবারের সদস্যদের অগোচরে একটি প্লাষ্টিকের বক্সে রেখে ঐদিনই চট্টগ্রামে ফিরে এসে সীতাকুণ্ড থানাধীন কালুশাহ মাজারের কাছে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে শুয়ে পড়ে। স্হানীয় লোকজন তাকে লেবু, পানি ইত্যাদি খাইয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে সে স্হানীয় লোকজনকে জানায়, সে ইউসুফ ফিশ এর কর্মচারী। এরই প্রেক্ষিতে সেখানকার জনৈক ব্যক্তি মাছ ব্যবসায়ী বাদি মোঃ ইউসুফের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে আবদুর রহিমকে অজ্ঞান অবস্হায় পাওয়ার বিষয়টি জানায়। বাদি সংবাদ পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে আবদুর রহিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। কর্মচারী আবদুর রহিম এই স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে ডবলমুরিং মডেল থানার এসআই ইমান হোসেনের নেতৃত্বে একটি টিম নোয়াখালীর চরজব্বর থানাধীন চরমজিদ গ্রামের আসামির নিজ বসতঘর থেকে বিবাদির দেখানোমতে চরজব্বর থানা পুলিশের সহায়তায় ৬,৩৩,০০০/- টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। অবশিষ্ট টাকা প্রসঙ্গে বিবাদি আবদুর রহিম জানায়, ঘটনার দিন সে নিজ ঘরে আত্মসাৎকৃত টাকা রেখে আসার সময় সে টাকার বান্ডেল থেকে কিছু টাকা সরিয়ে নিয়ে আসে, টাকাগুলো সে খরচ করে ফেলেছে।